ইউএসডিএ নিউট্রিশন ডাটাবেস অনুসারে খোসাবিহীন এক আউন্স পেস্তা বাদামে ১৫৯ ক্যালরি, ১২.৮ গ্রাম ফ্যাট, ৫.৭২ গ্রাম প্রোটিন, ৭.৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৩ গ্রাম ফাইবার ও ২ গ্রাম সুগার রয়েছে। অন্যদিকে ইউএসডিএ নিউট্রিশন ডাটাবেস অনুযায়ী খোসাসহ এক আউন্স পেস্তা বাদামে ৮৫ ক্যালরি, ৭ গ্রাম ফ্যাট, ৩ গ্রাম প্রোটিন, ৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১.৫ গ্রাম ফাইবার ও ১ গ্রাম সুগার থাকে।
অ্যাকাডেমি অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়েটেটিক্সের পুষ্টিবিদ ও মুখপাত্র সোনিয়া আনজিলোন বলেন, ‘পেস্তা বাদাম হচ্ছে ফাইবার, প্রোটিন, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, ভিটামিন ই, ফোলেট ও প্লান্ট স্টেরলসের (কোলেস্টেরল কমানোর প্রাকৃতিক উপাদান) প্রাচুর্যপূর্ণ উৎস। এ বাদাম স্বাস্থ্যকর মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটেরও ভালো উৎস।’
পেস্তা বাদামের স্বাস্থ্য উপকারিতা
একটি চেয়ারে আরাম করে বসুন ও পেস্তা বাদাম খেতে থাকুন- এ বাদাম আসলেই আপনার শরীরের জন্য ভালো। এখানে পেস্তা বাদামের ছয়টি উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা উল্লেখ করা হলো।
ফাইবারে সমৃদ্ধ: শরীরে ফাইবারের ঘাটতি হলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। পর্যাপ্ত ফাইবার খেলে পরিপাকতন্ত্র ভালোভাবে কাজ করতে পারে, ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যায় ভুগতে হয় না। খাবারের ফাইবার দীর্ঘসময় পেট ভরা রেখে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। ফাইবারের একটি চমৎকার উৎস হচ্ছে পেস্তা বাদাম। যেহেতু ফাইবার পেটভরা অনুভূতি ও তৃপ্তি বৃদ্ধি করে, তাই সঠিক পরিমাণে পেস্তা বাদাম খেয়ে ওজন কমাতে পারেন, বলেন ডা. লারসন।
কম ক্যালরি: পেস্তা বাদামে ক্যালরির পরিমাণ অন্য কিছু বাদামের চেয়ে কম। খোসাবিহীন এক আউন্স পেস্তা বাদামে মাত্র ১৫৯ ক্যালরি রয়েছে। অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ করলে ওজন বৃদ্ধি, কার্ডিওভাসকুলার তথা হার্ট ও রক্তনালির রোগ, ডায়াবেটিস ও বিষণ্নতার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত ক্যালরি থেকে উদ্ভূত সমস্যায় ভুগতে না চাইলে স্ন্যাকস হিসেবে পেস্তা বাদাম খেতে পারেন।
অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে প্রাচুর্যপূর্ণ: পেস্তা বাদামে অন্য বাদামের চেয়ে বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও প্রদাহরোধী উপাদান রয়েছে, বলেন ডা. আনজিলোন।
ভালো ঘুম আনে: পেস্তা বাদামে মেলাটোনিন পাওয়া যায়। এ হরমোন ঘুম ও জাগরণ চক্র নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ডা. আনজিলোনের মতে, অন্য বাদামের চেয়ে পেস্তা বাদামেই সবচেয়ে বেশি মেলাটোনিন থাকে। তিনি বলেন, ‘একমুঠো পেস্তা বাদাম খাওয়ার অর্থ হচ্ছে মেলাটোনিন সাপ্লিমেন্টের একটি বড়ি সেবন করছেন।’ জেট ল্যাগ বা আকাশপথে ভ্রমণ জনিত ক্লান্তি অথবা সাধারণ ক্লান্তি দূর করতেও পেস্তা বাদাম মুখে পুরতে পারেন।
প্রোটিনে ভরপুর: অন্য বাদামের তুলনায় পেস্তা বাদামে প্রোটিন ও ফ্যাটের সুন্দর ভারসাম্য রয়েছে, যা আপনাকে পেটভরা অনুভূতি ও তৃপ্তি দিতে পারে, বলেন ডা. আপটন। টিস্যু গঠন ও মেরামতে আপনার শরীর প্রোটিন ব্যবহার করে। শরীরে এনজাইম, হরমোন ও শারীরিক কেমিক্যাল উৎপাদনেও প্রোটিন ব্যবহৃত হয়। হাড়, মাংসপেশি, তরুণাস্থি, ত্বক ও রক্তের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিল্ডিং ব্লক হচ্ছে প্রোটিন।
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে: নিয়মিত পেস্তা বাদাম খেলে দীর্ঘস্থায়ী উপকার পাবেন, কারণ এতে মনোআনস্যাচুরেটেড ও পলিআনসাচুরেটেডের মতো স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে এসব ফ্যাট শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে পারে, যার ফলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস পাবে। এসব ফ্যাট শারীরিক কোষের বিকাশ ও ব্যবস্থাপনায়ও অবদান রাখতে পারে। এছাড়া পেস্তা বাদামের পলিআনসাচুরেটেড ফ্যাটে এমন প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা মস্তিষ্কের সুস্থ কার্যক্রমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত পেস্তা বাদাম খেলে মস্তিষ্কের বয়স জনিত জ্ঞানীয় ক্ষয় ধীর হবে, পরামর্শ দেন ডা. লারসন।